পর্যাপ্ত ঘুমের পরও ক্লান্তভাবে জেগে উঠছে তরুণ ভারতীয়রা

রিতিকা জৈন মাঝরাতে ঘুমোতে যান এবং পুরো সাত ঘণ্টা ঘুমোন, তবুও প্রায় প্রতিদিন সকালে তিনি ক্লান্ত বোধ করেন। “আমি বুঝতে পারছি না। আমি রাত ৩টা পর্যন্ত জাগি না, কোনো শো বিঞ্জও করি না, কিন্তু ঘুম থেকে উঠেই মনে হয় যেন ট্রাকের ধাক্কা খেয়েছি,” বলেন ২৯ বছরের হায়দরাবাদের কনটেন্ট এডিটর রিতিকা।

তিনি একা নন। Wakefit Great Indian Sleep Scorecard 2025 অনুসারে, শহরের অর্ধেক ভারতীয় বলেন, তারা রাতভর ঘুমিয়েও সকালে ক্লান্ত বোধ করেন। ৫৮% লোক রাত ১১টার পরে ঘুমোতে যান, এবং ৮৮% মানুষ মাঝরাতে বারবার ঘুমে ব্যাঘাত পান। বায়ার-এর এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, ২৫-৩৫ বছর বয়সী ভারতীয়দের মধ্যে ৮৫% মানুষ সকালে ক্লান্ত হয়ে ওঠেন।

তাহলে পর্যাপ্ত ঘুমের পরও এত ক্লান্তি কেন?

ঘুম বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধুমাত্র ঘুমের ঘণ্টার ওপর নির্ভর করে না, বরং ঘুমের মান ও শোওয়ার আগে কী করছেন সেটার ওপরও নির্ভর করে। “ঘুম কোনো সুইচ নয়—এটা এক ধরনের পরিবর্তন। আপনি যদি রাত্রে কাজের মেসেজের উত্তর দেন, রিলস দেখেন, বা ভারী কার্ব খাওয়া করেন, তাহলে ঘুমের চক্র খারাপ হয়ে যায়,” বলেন ডা. হরিণী বি, একজন ঘুম বিশেষজ্ঞ।

রাতের খাবারে অতিরিক্ত চিনি বা স্টার্চ থাকলে ইনসুলিন বেড়ে যায়, এরপর রাতের বেলায় রক্তে শর্করা কমে গিয়ে শরীর স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে, যার ফলে গাঢ় ঘুম ব্যাহত হয়।

এছাড়াও, অনেক তরুণ-তরুণী ‘রিভেঞ্জ বেডটাইম প্রোক্রাস্টিনেশন’-এর শিকার—দিনভর কাজের পর নিজের জন্য সময় বের করতে গিয়ে ঘুম দেরি করে দেন।

২৬ বছর বয়সী স্থপতি কার্তিক রাও বলেন, “আমি ঘুম ট্র্যাক করতে শুরু করলে বুঝি, আমি মাঝরাতে অনেকবার জেগে উঠি। রাত ১০টার পরে ফোন দেখা বন্ধ করে, রাতের খাবারের পরে হাঁটাহাঁটি শুরু করলে সকালে সতেজ বোধ করতে লাগলাম।”

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

  • ঘুমোতে যাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করুন

  • দুপুর ২টার পর ক্যাফেইন খাবেন না

  • রাতের খাবারের পরে হাঁটুন

  • ঘুমের অন্তত ৩০ মিনিট আগে ফোন দূরে রাখুন

কারণ, খারাপ ৮ ঘণ্টার ঘুমের চেয়ে উন্নত ৬ ঘণ্টার ঘুম অনেক ভালো।